একজন স্টুডেন্ট থেকে চেঞ্জমেকার হওয়া- নেতৃত্ব দক্ষতা কিভাবে গড়ে তুলবে
তুমি কি কখনও ভেবেছো, “আমি কি চেঞ্জমেকার হতে পারি”? যদি মাথায় এমন প্রশ্ন আসে, তাহলে বুঝে নিও যে তুমি চেঞ্জমেকার হওয়ার পথে হাঁটছো। চেঞ্জমেকার মানে এমন কেউ, যে নিজের চিন্তা, আইডিয়া আর একশন দিয়ে আশেপাশের দুনিয়ায় পজিটিভ পরিবর্তন আনে। এটা হতে পারে ছোট একটা কাজ—ক্লাসে কাউকে সাহায্য করা, বন্ধুদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা, বা নিজের কোনো উদ্যোগ শুরু করা।
নেতৃত্ব মানেই শুধু বস হওয়া নয়। চেঞ্জমেকার হওয়া মানে শুধু নিজের জন্য কিছু করা না, এটা হলো অন্যদের অনুপ্রাণিত করা, একসাথে দল নিয়ে কাজ করা আর সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসা। স্কুল লাইফে লিডারশিপ শেখার সবচেয়ে ভালো সময়। এখনই শুরু করতে পারো ক্লাস প্রেজেন্টেশনে নেতৃত্ব নেওয়া, কোনো ক্লাব পরিচালনা করা, বা বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ প্রজেক্টে গাইড করা থেকে। এসবই তোমার ভেতরের লিডারকে তৈরি করে।

নিজের ভেতরে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলো। ভুল করতে ভয় পেও না কারণ প্রতিটা ভুল তোমাকে কিছু না কিছু শেখাবে। ভুল মানেই তুমি শিখছো, বাড়ছো। একজন ভালো লিডার হতে হলে শুধু কথা বললেই হয় না, ভালো শ্রোতা হওয়াটাও জরুরি। অন্যের কথা মন দিয়ে শোনা মানে, তুমি সবাইকে গুরুত্ব দিচ্ছো। এতে দল গঠন আরও শক্তিশালী হয়। কোনো সমস্যা দেখলে শুধু অভিযোগ না করে, ভাবো। এর সমাধান কী হতে পারে? আর সুযোগ পেলেই ভলান্টিয়ারিং করো, এতে বাস্তব অভিজ্ঞতা হবে, নতুন মানুষ চিনবে, আর তৈরি হবে দারুণ একটা নেটওয়ার্ক।

আমরা অনেক সময় ভাবি, “আমার মতো একটা সাধারণ টিনএজার কী-ই বা করতে পারি?” কিন্তু জানো কি, বড় পরিবর্তনগুলো অনেক সময় শুরু হয় ছোট এক একটা চিন্তা থেকে।
তুমি নিজেও চেঞ্জমেকার হতে পারো। তোমার ভাবনা বা মতামত লেখালেখি, বক্তৃতা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্টভাবে প্রকাশ করো। ছোট কাজ দিয়েই শুরু করতে পারো। সমাজের ছোট ছোট সমস্যাগুলো যেমন পরিচ্ছন্নতা, শিক্ষা বা সচেতনতার অভাব। এই দিকগুলোতে কাজ করলে পরিবর্তন আসবেই। আজকাল অনেক তরুণ-তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ায় সমাজের জন্য কাজ করছে, যাদের দেখে অনেকে উৎসাহ পায়। তুমি চাইলে তাদের মতোই হয়ে উঠতে পারো। তোমার চিন্তা আর কাজ দিয়েই।

বাংলাদেশের কিছু তরুণ চেঞ্জমেকার:
সাবিকুন নাহার সাথী – ২০১৮ সাল থেকে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং এবং পরিবেশ সচেতনতার জন্য কাজ করছেন।
শাবাব মোহাম্মদ – ২০১৩ সাল থেকে Footsteps নামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করছেন।
উম্মে শারমিন কবির – ২০১৬ সাল থেকে period taboo ভেঙে সামাজিক সচেতনতায় কাজ করছেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন – ২০১৯ সাল থেকে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা পৌঁছে দিচ্ছেন।
তারা কিন্তু তোমারই মতো সাধারণ ছাত্রছাত্রী ছিল। এখন শুধু নিজের চিন্তা আর সাহস দিয়ে অসাধারণ কিছু করছে। তোমার ছোট একটি উদ্যোগই হতে পারে বড় পরিবর্তনের শুরু।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শুরু করা। আজ থেকেই নিজের চারপাশে ছোট ছোট সমস্যা চিহ্নিত করো এবং সেগুলোর সমাধানে ভাবো। তুমি যদি সত্যিই চাও, তবে তুমি হতে পারো সেই ব্যক্তি যে সমাজে পরিবর্তনের সূচনা করবে। তুমি কি তৈরি? চলো, চেঞ্জমেকার হই। একসাথে, এখনই।
আশা করি এই লেখাটি তোমাদের ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারো। এরকরম আরো মজার মজার আইডিয়া জানতে এবং ব্লগ পড়তে ভিজিট করো the7teen.com
ওহ, মেয়েদের দুরন্ত বয়ঃসন্ধি বইটিও কিন্তু পেয়ে যাবে আমাদের কাছে 7teen ফেসবুক পেইজে নক করলেই!





