টিনএজ মেডিটেশনঃ ৪টি সমস্যার সমাধানে ৪টি টেকনিক

কৈশোরের চঞ্চলতায় শান্ত হয়ে বসে মেডিটেশন বা ধ্যান করার চিন্তা সম্ভবত তোমাদের কাছে খুবই বোরিং শোনাবে! এরচেয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ক্রল করা, বা ভিডিয়ো গেমস খেলা আরো এক্সাইটিং মনে হবে!

তবুও, বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া তথ্য বারবার প্রমাণ করেছে যে আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর মেডিটেশনের উল্লেখযোগ্য পজেটিভ প্রভাব রয়েছে। যেই পজেটিভ প্রভাবগুলো টিনএজারদের বয়ঃসন্ধিকালের অনেক চ্যালেঞ্জ নিরসনে সাহায্য করতে পারে।

চলো জেনে নিই কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক স্বাস্থ্যে মেডিটেশনের ভূমিকা এবং কোন ধরনের মেডিটেশনে কীভাবে উপকৃত হওয়া যায়ঃ

১. পিরিয়ডের জন্য বডি স্ক্যান মেডিটেশনঃ

ঋতুস্রাবের কিছুদিন পূর্ব থেকে শুরু হয়ে চলাকালীন সময়ে অনেকেই PMS (Premenstrual Syndrome) এর বিভিন্ন সিম্পটমে ভোগে। মেন্সট্রুয়েশন ও মাইন্ডফুলনেস নিয়ে বিভিন্ন বয়সী ১২৭ জন নারীর উপর করা সিয়াটল প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির এক সার্ভেতে দেখা যায়, মেডিটেশন উল্লেখযোগ্যভাবে পিরিয়ডকালীন মানসিক এবং শারীরিক বিভিন্ন অস্বস্তির তীব্রতা হ্রাস করে।

তাই যখন পিরিয়ডের সময় কিশোরীরা হরমোনাল রোলারকোস্টার দিয়ে যায় এবং মুড সুইং, ক্র্যাম্পসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়, তখন “বডি স্ক্যান মেডিটেশন” করা কার্যকরী হতে পারে। এই টেকনিকটির মাধ্যমে শরীরের ব্যথা, উত্তেজনা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি খোঁজা হয়।

সঠিক পজিশনে বসে গভীর শ্বাস নেওয়া ও শারীরিক অবস্থা বা পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে স্ক্যান শুরু করতে হয়। এসময়ে গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে এবং ছাড়তে হবে। অন্তত দশ মিনিট এভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মেডিটেশন চালিয়ে যেতে হবে।

২. চোখের সুরক্ষায় ভিজ্যুয়ালাইজেশন মেডিটেশনঃ

অ্যামেরিকান পাব্লিকেশন সেইজ জার্নালে প্রকাশিত ‘গ্লুকোমায় দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসা রোগীদের উপর মাইন্ডফুলনেস ও ব্রিদিং এক্সারসাইজের প্রভাব’ নিয়ে একটি রিসার্চ করা হয়। এখানে,পাওয়া তথ্য অনুসারে মেডিটেশন ইন্ট্রাঅকুলার প্রেশার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমিয়ে আনতে পারে!

দৃষ্টিশক্তির সুরক্ষায় কিশোর-কিশোরীরা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে “ভিজ্যুয়ালাইজেশন মেডিটেশন” শুরু করতে পারে। এই মেডিটেশনে ডিপ ব্রিদিং এর পাশাপাশি আরামদায়ক আলো বা শান্তিপূর্ণ কোনো দৃশ্যের কল্পনা করা হয়। এর মাধ্যমে স্ট্রেস কমে এবং চোখে স্বস্তিবোধ হয়।

মেডিটেশনের সময় ব্রিদিং টেকনিক হিসেবে ‘বুটেয়কো ব্রিদিং’ অনুশীলন করা হয়। এই টেকনিকে ধীরে ধীরে শ্বাস ফেলার পর বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনী দিয়ে নাক ধরে রাখা হয়। এরপর আবারো দশ সেকেন্ডের জন্য স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেওয়া হয় এবং পুরো মেথড কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করা হয়।

৩. ফুসফুস ও হৃদপিন্ডের সহায়ক ডায়াফ্রাগমেটিক ব্রিদিং মেডিটেশনঃ

ক্লিভল্যান্ড ক্লিঙ্কের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ক্রোনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ ও কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের বিভিন্ন সমস্যা উপশমে এবং ফুসফুস ও হৃদপিন্ডের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য “ডায়াফ্রাগমেটিক ব্রিদিং মেডিটেশন” খুবই কার্যকরী।

এই মেডিটেশনে গভীরভাবে শ্বাস নিয়ে পেটের ভেতর আটকে রাখতে হয় এবং ফোকাস করতে হয়। এরপর ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছেড়ে ফুসফুস থেকে সমস্ত অক্সিজেন বের করতে হয়। শ্বাস নিতে, পেটে ধরে রাখতে এবং ছাড়তে মাথার ভেতর ধীরে ধীরে চার পর্যন্ত গণনা করতে হয়।

৪. ক্রোনিক পেইন কমাতে স্ট্রেস রিডাকশন মেডিটেশনঃ

টিনএজ সময়ে খেলাধুলা ও অন্যান্য অ্যাক্টিভিটি জনিত দুর্ঘটনায় অনেক কিশোর-কিশোরীই দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় ভোগে। “মাইন্ডফুলনেস-বেসড স্ট্রেস রিডাকশন” এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

মাইন্ডফুলনেস-ভিত্তিক স্ট্রেস রিডাকশন (MBSR) হল ম্যাসাচুসেটস মেডিক্যাল সেন্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন কাবাট-জিন দ্বারা তৈরি একটি প্রোগ্রাম। এটা ঠিক একটা নির্দিষ্ট মেডিটেশন টেকনিক নয় বরং বেশ কিছু টেকনিকের সমন্বয়। এখানে মননশীল হয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া, যোগব্যায়াম, অনুভূতির প্রকাশ এবং বিভিন্ন অ্যাকশন যেমনঃ হাঁটা, স্ট্রেচিং ইত্যাদির মাধ্যমে শারিরীক ব্যাথা নিয়ন্ত্রণ, দুঃশ্চিন্তা কমানো ও মাইন্ডফুল লিভিং এ অভ্যস্ত করানো হয়।

উল্লেখিত সবগুলো মেডিটেশন টেকনিকেই খুব একটা বেশি সময় বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। ছোট ছোট সেশন দিয়ে মেডিটেশন শুরু করা কিশোর বয়স থেকেই শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার খুবই ভালো একটি মাধ্যম হতে পারে। তাই প্রতিদিন কয়েক মিনিট আলাদা করে রেখে দাও পছন্দের মেডিটেশনের জন্য, তা সকালে হোক, বিরতিতে হোক বা হোক ঘুমানোর আগে।

– নাদিয়া নুসরাত

3 thoughts on “টিনএজ মেডিটেশনঃ ৪টি সমস্যার সমাধানে ৪টি টেকনিক”

  1. What a fantastic resource! The articles are meticulously crafted, offering a perfect balance of depth and accessibility. I always walk away having gained new understanding. My sincere appreciation to the team behind this outstanding website.

    1. Imagination counts, it actually counts as a visualization meditation and mindfulness meditation. To reap the full benefits, here some more things you can do:
      1. Take deep breaths while imagining.
      2. Imagine lf peace and calm things in a controlled manner.
      3. Think of as many details as possible, such as, if you are imagining a garden, try to focus colors, shapes, leaves of the garden.

      Hope it helps and share it with your friends.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *