টিন লাইফস্টাইল বিনোদন

টিনএজারদের জীবনে মিউজিকের প্রভাব

how music effects teenage-7teen

গান শুনতে ভালো লাগে না এমন মানুষ হয়ত খুব কমই পাওয়া যাবে। সবার জীবনেই সঙ্গীত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণ মুহুর্তকে সুরের লহমায় অসাধারণ করে প্রিয় স্মৃতি তৈরীতে, মন খারাপের সময়কে একটু সহজ করতে গানের জুড়ি নেই। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছ কেন মিউজিকের এতো প্রভাব? বিশেষ করে, কিশোর বয়সে তোমার উপর এর কেমন প্রভাব পড়ে?

চলো জেনে নিই কৈশোরে তোমার উপর গানের প্রভাব সম্পর্কে…

১. সুরের তানে বাড়াও বুদ্ধি!

সঙ্গীত তোমার স্মৃতিশক্তি এবং ফোকাসকে বৃদ্ধি করতে পারে। তেহরানের একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপর রিসার্চ করে দেখা গেছে যে মিউজিক ক্লাসে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য IQ বৃদ্ধি পেয়েছে! বৃদ্ধি পেয়েছে মৌখিক যুক্তি ও শর্ট টার্ম মেমোরি। এক্ষেত্রে ক্লাসিক্যাল মিউজিক বেশি কার্যকর। 

শুধু তাই নয় মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট বাজানো অনুশীলন করলে মস্তিষ্কের নিউরোপ্লাস্টিসিটি বৃদ্ধি পায়, বৃদ্ধি পায় হাত ও আঙুলের সমন্বয় দক্ষতা। সঙ্গীত-ভিত্তিক থেরাপি মোটর ফাংশন, ভারসাম্য, হাঁটার গতি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে।

২. গানে প্রকাশ করো অনুভূতি।

নিজেকে প্রকাশ করার জন্য গান একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। সঙ্গীত মানুষকে তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়, পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান সামাজিক পরিবেশের সাথে সংযুক্ত করতে পারে। মন খারাপ? আপবিট মিউজিক তোমার প্রফুল্লতা বাড়িয়ে দিতে পারে। একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছ কিন্তু নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারছ না? চিন্তার কারণ নেই, খুবই সম্ভব যে ইতিমধ্যে একটি গান আছে যার লিরিকে ফুটে উঠেছে তোমার আবেগ! 

৩. গানে গানে হয় বন্ধুত্ব

মিউজিক অন্যদের সাথে কানেক্ট হওয়ার একটি দুর্দান্ত উপায়। বন্ধুদের সাথে তোমার প্রিয় গান বা ব্যান্ড শেয়ার করে নেওয়া, এমনকি কয়েকজন মিলে একটি ব্যান্ডে যোগদান করা গভীর বন্ধুত্ব গড়তে সাহায্য করে৷ 

শুধু তাই নয়, তুমি যদি পপুলার হতে চাও, এখানেও গান অনেক কার্যকরী। আমেরিকার হাইস্কুল গুলোর উপর করা এক সার্ভেতে দেখা গেছে যে একটি ব্যান্ডে থাকা সহপাঠিদের মধ্যে তোমার জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলতে পারে!

৪. কনফিডেন্স বৃদ্ধিতে ও মন ভালো করতে মিউজিক

অল্প কিছু জিনিসই মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে যেভাবে মিউজিক করতে পারে। সঙ্গীত মস্তিষ্কের ডোপামিন হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে পারে। ডোপামিন কে বলা হয় হ্যাপি হরমোন বা ফিল-গুড হরমোন, যা তোমার মন ভালো করতে সহায়ক।

এছাড়াও, বাদ্যযন্ত্র বাজানোয় আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি হতে পারে। জনস হপকিন্সের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে গান শোনার ফলে উদ্বেগ, রক্তচাপ এবং ব্যথা কমার পাশাপাশি ঘুমের মান, মেজাজ, মানসিক সতর্কতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। 

৫. মিউজিকের নেতিবাচক প্রভাব

গান শোনার ক্ষেত্রে তুমি কী শুনছ তার দিকে খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সব গান তোমার শোনার জন্য উপযুক্ত নয়। কারণ দেখা গেছে সহিংসতা বা নেতিবাচকতা প্রচার করে এমন লিরিক তোমার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু কতোটা? 

আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স-এর অফিসিয়াল জার্নাল পেডিয়াট্রিক্স- দ্বারা প্রকাশিত গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে কিশোর-কিশোরীরা নিয়মিত হিংসাত্মক গান শোনে তাদের শারীরিক মারামারিতে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুণ বেশী! সম্ভাবনা বেড়ে যায় ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে জড়িত হওয়ার।নিজেকে বুঝতে, প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে এবং মন ঠিক রাখতে গানের জুড়ি নেই। তবে মনে রাখবে, সব গান তোমার জন্য সেরা বীট নাও হতে পারে৷ তাই বড়দের সাহায্য নিয়ে প্লেলিস্ট বাছাই করো, সুর ও ছন্দের সাথে থাক।

আশা করি এই লেখাটি তোমাদের ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারো। এরকরম আরো বিষয়ে জানতে এবং ব্লগ পড়তে ভিজিট করো the7teen.com

M S

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

টিন লাইফস্টাইল

পরীক্ষার ভয় দূর করার ৭টি টিপস!

পরীক্ষা এলেই কি তোমার মনে হয় কিছুই পড়া হয় নি? বারবার পড়া বিষয়গুলোও ভুলে যাচ্ছো, কিছুতেই মনে করতে পারছো না!
টিন লাইফস্টাইল

টাইম ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হয়ে উঠতে ৫ টিপস!

কলেজ, পড়ালেখা, এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনসহ ব্যক্তিগত শখ, ইচ্ছা পূরণের মাঝে ভারসাম্য আনতে প্রতিদিন হিমসিম খেতে হয়