সাইবার হ্যারেজমেন্টঃ ভয় নয়, প্রতিরোধ করো সাহসের সাথে (পর্ব ০১) 

cyber harassment prevention

এএফপির একটি সংবাদ অনুসারে, পৃথিবীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীর বর্তমান সংখ্যা ৫০০ কোটিরও বেশি। এই সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬২.৩%! 

মিডিয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থা মেল্টওয়াটার এবং সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা উই আর সোশ্যালের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যা বিশ্বের জনসংখ্যার ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধিকে ছাড়িয়ে গেছে! 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৬৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩০০ জন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ১০০ জনে। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশেরও বেশি। এরমধ্যে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারী ৩ কোটি ১৪ লাখেরও বেশি। 

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ৪৭ লাখ চার হাজার ১০০ জন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী ছিলেন। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৬৮ লাখ ১৩ হাজার ৪০০। বয়সভিত্তিক হিসাবে বাংলাদেশের ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের প্রায় ৫৯ শতাংশই ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ, যা সংখ্যার হিসাবে ৪০ লাখের বেশি।

এছাড়াও টিকটকে যুক্ত আছে অসংখ্য কিশোর ও তরুণ। 

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বল্প সময় এবং সহজে যোগাযোগ, একে অপরের সাথে সব সময় কানেক্টেড থাকা, এই সুবিধাগুলোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিনে দিনে আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। 

তবে, এমন ভালো কিছু বিষয়ের পাশাপাশি খারাপও কিন্তু আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হওয়ার ঘটনাও আমরা দেখতে পাচ্ছি। যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো সাইবার হ্যারাজমেন্ট। 

সাইবার হ্যারাজমেন্টের বর্তমান চিত্র ও প্রভাব

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সাইবার অপরাধের শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৫০ দশমিক ২৭ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার। ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৮০ দশমিক ৯০ শতাংশই ১৮ থেকে ৩০ বছরের নারী। 

সাইবার হ্যারেজমেন্টের শিকার ভুক্তভোগীরা সামাজিক মর্যাদা ও লজ্জার ভয়ে অপরাধের বিষয়গুলো এড়িয়ে যান এবং কোথায়ো অভিযোগ জানাতে আগ্রহী হন না। 

এর ফলে অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে এবং অপরাধের মাত্রা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। সাইবার হ্যারাজমেন্টের শিকার ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগ এবং হতাশা তৈরি হতে পারে।কটূক্তি বা ট্রোলিংয়ের ফলে ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস নষ্ট হতে পারে।অনলাইনে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কারণে অনেকে সমাজ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। বন্ধুবান্ধব বা পরিবারকে জানাতে সংকোচবোধ করার কারণে তারা একা অনুভব করতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর হয়রানির ফলে ব্যক্তির আত্মহত্যার ঘটনাও আমরা দেখেছি। সাইবার হ্যারেজমেন্ট আত্নহত্যা প্রবণতা বাড়তে পারে।


ব্লগটি কেমন লাগলো? আগামী পর্বে আমরা  কেউ সাইবার হ্যারেজমেন্টের শিকার হলে ভয় না পেয়ে কীভাবে তা মোকাবেলা করতে হবে এ নিয়ে জানতে পারবো। ভালো লাগলে ব্লগটি সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের শেয়ার করতে ভুলোনা। 

আরো ব্লগ পড়তে ভিজিট করতে পারো the7teen.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *