সম্পর্কের সীমারেখা নির্ধারণ

healthy relationship-how to say no

সম্পর্ক যতই গভীর হোক, সেই সম্পর্কে থাকা চাই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা। থাকা চাই একে অপরের পছন্দ-অপছন্দের প্রতি যথার্থ সম্মান। ইনফরমাল রিলেশন গুলোতেও থাকা উচিত একটি পরিষ্কার বর্ডার লাইন, যেখানে উভয় পক্ষেরই জানা থাকবে সম্পর্কের একটি নির্ধারিত সীমারেখা। বিখ্যাত সাইকোথেরাপিস্ট- Nedra Glover Tawwab তার লেখা ‘ SET BOUNDARIES, FIND PEACE’ – নামক বইটিতে উল্লেখ করেন,  ‘সম্পর্কের সীমারেখা নির্ধারণ কোনোভাবেই একটি সম্পর্ককে ব্যাহত করে না’। এই বইয়ে তিনি তার বাস্তব জীবনের থেরাপিউটিক চিকিৎসার বিভিন্ন কেস-স্টাডির আলোকে সম্পর্কে সীমারেখার অভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যার চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘সম্পর্কের সীমারেখা নির্ধারনই একটি সুস্থ ও সুন্দর সম্পর্কের পূর্বশর্ত’। আজ তোমাদের জন্যে থাকছে সম্পর্কে সীমারেখা নির্ধারণে কিছু গাইডলাইন।

জানিয়ে দাও তোমার ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ  

সম্পর্ক নতুন হোক কিংবা পুরনো, মানুষের পক্ষে তোমার পছন্দ-অপছন্দ অথবা দৃষ্টিভঙ্গির সবটুকু বুঝে ওঠা সম্ভব নয়। ধরে নাও তোমার কাছের মানুষটি পাবলিক প্লেইসে এমন একটি কাজ করলো কিংবা ঠাট্টার ছলে তার বন্ধুদের সামনে তোমাকে নিয়ে এমন একটি জোঁক করলো যা আঘাত করলো তোমার আত্মসম্মানবোধকে। হতে পারে, বিষয়টি না জানার কারণে একই কাজ সে বার বার করছে, যার কারণে তৈরি হচ্ছে সম্পর্কের তিক্ততা। তাই, তোমার ব্যক্তিগত ইমোশন কিংবা ফিলিংস এর বিষয়গুলো সম্পর্কে জানিয়ে দাও তোমার কাছের মানুষদের।

প্রাইভেসি ইস্যুতে নো স্যাকরিফাইস 

প্রাইভেসি ইস্যুতে পার্টনারকে জানিয়ে দাও তোমার ব্যক্তিগত সীমারেখা। তোমার ব্যক্তিগত প্রাইভেসি এমন একটি ইস্যু যার সাথে যুক্ত তোমার ক্যারিয়ার এবং তোমার পরিবারের সোশ্যাল লাইফ। প্রাইভেসি নিয়ে তোমার করা ছোট্ট একটি ভুলের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে তাদের জীবনেও। তাই, সম্পর্ক যতোই গভীর হোক প্রাইভেসি ইস্যুতে করা যাবে না কোন প্রকার স্যাকরিফাইস। এতে করে যদি সম্পর্কে ভাঙনের সৃষ্টি হয় তো হোক! কারণ, যে মানুষটি তোমার প্রাইভেসি নিয়ে সচেতন নয়, আর যাই হোক তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন মোটেও উচিত নয়।  

‘না’ বলতে শিখো 

এমন সব আবদার যা তোমার কমফোর্ট জোনের বাইরে কিংবা এমন সব অনুরোধ যা তোমার সাধ্যের বাইরে গিয়ে ঠেকে, সেইসকল বিষয়ে ‘না’ বলতে শেখো কোন বিষয়ে তুমি ইতিবাচক এবং কোন বিষয়ে তুমি নেতিবাচক ধারণা পোষন করো তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দাও তোমার কাছের মানুষদের। কাছের মানুষদের না বলা কঠিন কিন্তু তোমার নিজস্বতা রক্ষায় তোমাকে থাকতে হবে পাহাড়ের মতো অটল।

গিভ স্পেইস এন্ড টেইক স্পেইস 

প্রিয় মানুষের পাশাপাশি তোমার ব্যক্তিগত কাছের মানুষজন যেমন পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সময় দেওয়াটাও কিন্তু সমান ভাবে জরুরি। তাই তোমার চাই একটি পার্সোনাল স্পেইস বা ব্যক্তিগত মুহূর্ত। অনেক সম্পর্কে দেখা যায় একে অন্যের সোশ্যাল লাইফ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে, এতে করে সম্পর্ক হয়ে ওঠে একঘেয়ে। তাই প্রিয়জনের সাথে বসে ঠিক করে নাও উভয়ের ব্যক্তিগত জীবনের অগ্রাধিকারসমূহ। 

পার্টনারের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাও 

 যে কোনো সম্পর্কে তোমার সিদ্ধান্তের গুরুত্ব তৈরি করতে হলে তোমাকেও ছোট ছোট বিষয়ে প্রিয়জনদের সিদ্ধান্ত গুলোর সম্মান দিতে হবে। এতে করে সম্পর্কের মাঝে একটি বোঝাপড়ার সৃষ্টি হবে। তারাও তোমার সিদ্ধান্তের প্রতি হবে শ্রদ্ধাশীল।

ওভার-পোসেসিভনেস সম্পর্কের জন্যে ক্ষতিকর 

 পার্টনারের প্রতি পোসেসিভ কিংবা রক্ষণাত্মক হওয়া ভালো তবে, ওভার পোসেসিভনেস সম্পর্কের জন্যে ক্ষতিকর। এতে সৃষ্টি হয় সম্পর্কের তিক্ততা। তাই তোমার পার্টনার যদি হয় ওভার-পোসেসিভ তবে এই বিষয়ে তাকে দৃঢ়তার সহিত একে দাও একটি সীমারেখা যার অতিক্রমে তুমি টেনে নিবে এই এবিইসিভ সম্পর্কের ইতি! 

আশা করি এই লেখাটি তোমাদের ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারো। এরকরম আরো বিষয়ে জানতে এবং ব্লগ পড়তে ভিজিট করো the7teen.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *