সন্তানকে ডিভাইস আসক্তি থেকে মুক্ত করার চেষ্টা (পর্ব ০৩)

একসাথে মিলে খেলার যে আনন্দ, জায়গার অভাবে বাচ্চারা এখন আর তা পায় না। একবার সে আনন্দ পেয়ে গেলে তাদের ডিভাইস আসক্তি কমবে বলে ধরে নিতে পারেন।

এর জন্যে আপনার বাসস্থানে বাচ্চাদের খেলার জায়গা থাকলে তো খুবই ভালো। আর না থাকলে এলাকার মাঠে খেলতে নিয়ে যাওয়া যায়।

সে সুবিধা না থাকলে ছাদে বা কারো বাড়িতে যদি একটু বড় জায়গা থাকে তো একটা নির্দিষ্ট সময়ে সকলে খেলতে পারে।

এতে বাচ্চাদের শুধু খেলা হবে তা নয়। সেই সাথে একে অন্যের সাথে মিলে মিশে থাকা, শেয়ারিং, সিচুয়েশন ম্যানেজ করা, কথা বলার পারদর্শিতা ইত্যাদি নানা বিষয় শিখতে পারবে। এ জায়গায় শুধু নিশ্চিত করবেন যাতে একজন বড় মানুষ সেই জায়গায় প্রেজেন্ট থাকেন। তাহলেই নানা অঘটন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

বাচ্চাদের দেশীয় খেলায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। তিন গুটি, ১৬ গুটি, ৭চাড়া, কুতকুত, দড়ি লাফ(স্কিপিং), বরফ পানি, হাডুডু ইত্যাদি খেলা আজকালকার শহুরে বাচ্চারা নাম জানে কী না সন্দেহ আছে। এসব খেলায় কিন্তু শারিরীক এবং মানসিক বিকাশ ঘটে। যদি জায়গা থাকে তো এসব খেলা খেলাতে পারেন।

বাড়িতে লুডু, দাবা খেলা যায়। আমরা বাড়িতে উনো খেলি। শীতের সময়ে আমরা সব সদস্য মিলে ব্যাডমিন্টন খেলি। বিকেলের দিকে সাইকেল চালাই।

যদি বাচ্চার সময় থাকে এবং বাবা মায়ের ইচ্ছা বা সুবিধা থাকে তো বাচ্চাদের নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি শিখতে দিতে পারেন। এসব একজন শিশুর মনোজগতের উন্নয়নে ভীষণ ভাবে উপকার করে।

সন্তানকে বাইরে খেলতে না দিয়ে অন্য নানাবিধ কাজে ব্যস্ত রাখার ফাঁকে একটু ফোনে খেলতে দেবার যে প্র‍্যাক্টিস একসময় শুরু হয়ে গিয়েছিল, এর থেকে বের হওয়ার সময় এসে গেছে। খোলা মাঠে উন্মুক্ত আকাশের নিচে খেলতে দিন। ডিভাইস আসক্তি নিজে থেকেই কমে যাবে।

– মুসাররাত নাজ

(একজন টিনএজার কন্যার মা)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *