স্বাস্থ্য ও সুস্থতা

বয়:সন্ধিতে রাগ নিয়ন্ত্রনের সেরা ৭টি টিপস

কোনো কারণ নেই তবু সব কিছুর উপর রাগ লাগছে! বিরক্ত লাগছে প্রিয় গিটারকে। প্রিয় দলের খেলা তুমি কখনোই মিস করো না, কিন্তু আজ ইচ্ছেই করছে না খেলা দেখতে। আবার কথা নেই বার্তা নেই কোথা থেকে এক খন্ড মেঘ এসে তোমার মনের উপর বসে মন খারপ করিয়ে দিয়ে চলে গেলো? চোখে অকারণেই পানি জমলো। প্রিয় ব্যালকনিতে দাঁড়াতে আর ইচ্ছে হলো না। অভিমান জমলো সব কিছুর উপর, কোনো কারণ ছাড়াই! হয় এমন তোমার কখনো?

বয়ঃসন্ধিতে র‍্যাপিড হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে এমনটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। শুধু তুমিই নও, বয়ঃসন্ধি পার করে আসা প্রতিটি মানুষকেই এমন পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। এই পরিবর্তন স্বাভাবিক। তবে স্বাভাবিক হলেও মাঝেমধ্যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না জানলে কিন্তু বিপদও ঘটতে পারে! এই যেমন ধরো রাগ। রাগ তো সবারই থাকে। কারণে অথবা অকারণে সবারই রাগ হয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো সেই রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানা। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে প্রিয় বন্ধুর সাথে তোমার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে, তোমাকে ভুল বুঝতে পারে আত্মীয়-স্বজন, বাবা-মায়ের সাথেও দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে! হতে পারে আরো অনেক কিছুই। তাই, চলো আজ জেনে নিই কীভাবে তুমি তোমার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারো –

শান্ত পরিবেশে যাওঃ কোনো কারণে রেগে গেলে চেষ্টা করো সেই স্থান থেকে সরে কোনো শান্ত ও নিরিবিলি স্থানে যাওয়ার। কিছুক্ষণ বসে থাকো সেখানে। শান্ত পরিবেশটা উপভোগ করো। কিছুক্ষণ পর নিজেই অবাক হয়ে দেখবে রাগ কমে গেছে! 

রাগের কারণ খুঁজে বের করোঃ কী তোমাকে রাগিয়ে দিচ্ছে? কোন বিষয়টা তোমাকে বিরক্ত করছে? খুঁজে বের করো। একবার খুঁজে বের করতে পারলেই দেখবে তুমি পরবর্তীতে সেই বিষয়গুলি এড়িয়ে যেতে পারছো, অথবা বিষয়গুলির সাথে কীভাবে খাপ খাইয়ে চলা যায় সেই পদ্ধতি তুমি নিজেই আবিস্কার করে ফেলেছো! 

সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াওঃ সমস্যা সমাধানে তুমি যতো দক্ষ হবে, ততোই তুমি নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে যাবে। রেগে গিয়ে হঠাৎ করেই কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে চেষ্টা করো সমস্যার কোনো সমাধান তুমি বের করতে পারো কি না। 

নিয়মিত ব্যায়াম করোঃ রাগ ও মানসিক চাপ কমানোর চমৎকার এক পদ্ধতি হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম করা। নিয়মিত ব্যায়াম তোমার মস্তিস্কে অস্কিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে যা তোমাকে রাগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং তোমার শক্তি বাড়িয়ে দেবে। 

মানসিক অস্থিরতা কমাওঃ অস্থিরতা কিন্তু রাগের অন্যতম প্রধান কারণ! তুমি যদি মানসিক অস্থিরতায় ভুগে থাকো তবে পরিবারের যার সাথে তুমি ফ্রি তার সাথে কথা বলো, কোনো কিছু শেয়ার করার থাকলে শেয়ার করো।

পজিটিভ মানসিকতার বন্ধুর সাথে সময় কাটাওঃ এমন বন্ধুর সাথে সময় কাটাও যে বন্ধুটি পজিটিভ মানসিকতার। তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো এমন বন্ধুর কাছ থেকে তুমি অনেক সাহায্য পাবে। অপরদিকে নেগেটিভ মানসিকতার বন্ধু থাকলে চেষ্টা করো তার থেকে দূরে থাকার। কারণ তার সাথে থাকলে তোমার ভেতরও নেগেটিভ অনেক বিষয় চলে আসবে। আর জানোই তো, রাগ কিন্তু নেগেটিভ একটি বিষয়!

নিজেকে সময় দাওঃ প্রতিদিন অল্প কিছুটা সময় হলেও নিজেকে দাও। এই সময়ে তুমি তোমার প্রিয় কোনো গান শুনতে পারো, পড়তে পারো প্রিয় কোনো বই বা হেঁটে আসতে পারো বাইরে থেকে। নিজের যত্ন নিলে, নিজেকে সময় দিলে শুধু রাগ নয়, রাগের মতো আরো অনেক খারাপ অভ্যাস তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে। 

এই কয়েকটি পদ্ধতি ফলো করে দেখো তো তুমি আগের থেকে আরো ভালো রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারো কি না!

admin

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

স্বাস্থ্য ও সুস্থতা

বয়ঃসন্ধিতে শারীরিক পরিবর্তন

বয়ঃসন্ধি শব্দটির সাথে তোমরা সবাই পরিচিত নিশ্চয়?  আচ্ছা, সহজ করে দিচ্ছি।  জন্মগ্রহনের পর একজন মানুষকে শৈশব ও যৌবন, এই দুই
স্বাস্থ্য ও সুস্থতা

বয়ঃসন্ধিতে তোমার শারীরিক ও মানসিক যত্ন

খুব অল্পতেই রেগে যাওয়া, কোনো কারণ ছাড়াই হেসে ওঠা, কারো অল্প একটু ভালো ব্যবহারেই অনেক খুশি হয়ে যাওয়া আবার কারো