অনলাইন ও অফলাইনের মাঝে ব্যালেন্স তৈরি করবে যেভাবে!

বর্তমান গতিশীল এই টেকনোলজির যুগে দিনের বড় একটি সময় অতিবাহিত হয় মোবাইল ফোন, কম্পিউটার কিংবা টেলিভিশন দেখে। টেকনোলজির সুবাদে পড়াশোনা সহ অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রমের অনেক বিষয়েই ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এছাড়া, নানান ধরনের ভিডিও গেমস, কার্টুন কিংবা সিনেমা দেখার পাশাপাশি তোমাদের দিনের লম্বা একটি সময় হয়তো অতিবাহিত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে। এসব কারণে যেমন কমে এসেছে শারীরিক কার্যক্রমের পরিমাণ, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অল্প বয়সে স্থূলতা বিষয়ক নানান সমস্যা। 

American Paediatric Society – এর মতে, দৈনিক ১-২ ঘণ্টার বেশী ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারী শিশুদের মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা (Attention Skill) ও জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা (Cognitive Skill) অন্যান্য শিশুদের তুলনায় অনেকটাই কম হয়। এর পাশাপাশি কিছু আচরণগত সমস্যাও (Behavioral Problem) দেখা যায়। ইলেকট্রনিক ডিভাইসের পর্দা হতে নির্গত এক ধরনের ক্ষতিকর নীল রশ্মি এর জন্যে দায়ী। তাই প্রযুক্তিগত বিনোদন ও দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রম সমূহের মাঝে একটি সক্রিয় ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। 

চলো তাহলে জেনে নিই এই ভারসাম্য আনতে কী কী করা যেতে পারে। 

স্ক্রিন টাইম ব্যবহারের রুটিন তৈরি 

তোমার ব্যক্তিগত ডেইলি রুটিনে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে পড়ালেখা, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিনোদন, এসবের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে ফেলো। চেষ্টা করো তোমার দৈনিক স্ক্রিন টাইম সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা রাখার।

সুডোকু ও পাজল গেমস খেলা

তোমার পছন্দের ভিডিও গেমসের তালিকায় রাখতে পারো বিভিন্ন ধরনের সুডোকু ও পাজল গেমস। অনেক দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত এই ধরনের গেমস তাদের বিনোদন পাতায় ছাপিয়ে থাকে। এসব গেমস তোমাকে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি সাহায্য করবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে।

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা 

পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি বিখ্যাত লেখকগণের লেখা গল্প, কবিতা ও ইতিহাসের বই সমূহ পড়তে পারো। এসব বই তোমাকে পৌঁছে দেবে সাহিত্যের অনন্য এক ভুবনে। এতে করে তোমার অবসরের সময়গুলো যেমন রোমাঞ্চকর হবে, তেমনি ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে তোমার জ্ঞানের পরিধি।

খেলার মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠা 

কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ফোনের গেমসগুলো যেমনই হোক না কেনো খেলার মাঠে সহপাঠী ও বন্ধুরা মিলে ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলায় মেতে ওঠার আনন্দটাই যেন অন্যরকম তাই না? এইসব খেলার পরাজয় গুলোও যেন জয়লাভের মতোই আনন্দময় হয়। খেলাধুলার মাধ্যমে বন্ধুদের মাঝে বোঝাপড়াটাও আরো সুন্দর হয়ে ওঠে। 

পরিবারকে সময় দেওয়া 

পড়ালেখা ও অবসরের বিনোদনের পাশাপাশি তোমার দিনের একটি অংশ রাখো পরিবারের সদস্যদের জন্য। এই সময়টুকু কোনো ডিভাইস নয় বরং তাদের সাথে গল্প করে কাটাও। পারিবারিক কাজে তাদের সাহায্য করো। এতে করে তৈরি হবে একটি সুস্থ পারিবারিক বন্ধন। 

অনলাইন ও অফলাইনের মাঝে একটি স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য তৈরি করতে এই টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারো। 

– মোঃ রাফসান তালুকদার

(রিসার্চার, মেডিক্যাল প্রফেশনাল)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *