টিনএজ প্রেগনেন্সি বা কৈশোরকালীন গর্ভাবস্থা!(পর্ব-২)

টিনএজ প্রেগনেন্সি নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কর্মসূচি এবং সুবিধা সমূহ 

কর্মসূচি : বাল্যবিবাহ বন্ধে জাতীয় পরিকল্পনা ২০১৮-২০৩০ এ উল্লিখিত, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ২.১ ধারায় বিবাহের ন্যুনতম বয়স হিসেবে পুরুষের ২১ বছর এবং নারীর ১৮ বছর বয়সকে নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিবাহ নিবন্ধন বন্ধ করতে জন্মনিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রের সঠিক যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সুবিধাসমূহ : স্কুলের মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি কর্মসূচি অনুযায়ী মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত ছাত্রী উপবৃত্তি, বেতন মওকুফ সুবিধা, বই ক্রয়ের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য পরীক্ষার ফি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া, মেধাবী ছাত্রীদের সাধারণ মেধাবৃত্তি এবং বৃত্তিমূলক কারিগরি শিক্ষাবৃত্তির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

টিনএজ প্রেগনেন্সি নিরসনে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ক শিক্ষার গুরুত্ব:

টিনএজ প্রেগনেন্সি রোধে তোমাকে জানতে হবে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার সম্পর্কে। তবেই তুমি জানবে এবং জানাতে পারবে অনিরাপদ যৌনতা কি? জন্মনিরোধক কী এবং নানান ধরনের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিরোধকের পার্থক্য, সুবিধা-অসুবিধা। তাছাড়া, একজন কিশোরী হিসেবে যদি তুমি গর্ভবতী হয়েও থাকো তাহলে তুমি কিন্তু একা নও। তোমাকে সাহায্য করার জন্যে রয়েছে অসংখ্য সংস্থা। পরামর্শ পেতে পারো তোমার নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিক, সূর্যের হাসি ক্লিনিক, বিশেষায়িত মা ও শিশু কেন্দ্র এবং মমতা মা ও শিশু হাসপাতাল গুলোর মতো সংস্থা থেকে।

টিনএজ প্রেগনেন্সি নিরসনে তোমাদের করণীয় :

এটি একটি গুরুতর সমস্যা। এটি তোমাদের শিক্ষা, ক্যারিয়ার এবং জীবনের লক্ষ্যগুলোকে বাধাগ্রস্থ করে। তাই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন কিশোরী হিসেবে তোমরাই উপলব্ধি করতে পারো এর মর্ম। টিনএজ প্রেগনেন্সি নিরসনের কার্যকরী পন্থা হলো সচেতনতা তৈরি করা। যেমন – শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের নগদ অর্থ প্রদান, বৃত্তি, বিনামূল্যে বই ও ইউনিফর্ম প্রদান সহ সরকারের দেয়া সকল সুবিধাগুলো সম্পর্কে সকলকে অবগত করা। এসব সেবার খবর প্রচার করার মাধ্যমে দরিদ্র অভিভাবকগণের মাঝে সৃষ্টি করতে পারো সচেতনতা। সচেতনতামূলক বার্তা সমূহ পোস্ট করতে পারো তোমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টে। টিনএজে গর্ভধারণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানাতে পারো তাদের অভিভাবকদের। 

সবার সম্মলিত প্রচেষ্টাতেই টিনএজ প্রেগন্যান্সি বন্ধ করা সম্ভব। 

– মোঃ রাফসান তালুকদার

(রিসার্চার, মেডিক্যাল প্রফেশনাল)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *