হাইজিন রক্ষা করে সুস্বাস্থ্যে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি, পিরিয়ডকালীন সময়ে মেয়েদের অস্বস্তি কিছুটা কমিয়ে, চলাফেরা সহজ করতে সাহায্য করে স্যানিটারি ন্যাপকিন, ট্যাম্পন ও মেন্সট্রুয়াল-কাপ জাতীয় মেন্সট্রুয়াল প্রোডাক্ট।
আরাম, চাহিদা, মূল্য ও সহজে ব্যবহারযোগ্যতার পাশাপাশি পিরিয়ডের ফ্লো এর উপর ভিত্তি করে পিরিয়ড প্রোডাক্টে রয়েছে ভিন্নতা।
আজ তোমাদের জানাবো প্রচলিত কিছু পিরিয়ড প্রোডাক্ট নিয়ে। যেন তুমি নিজের জন্য বেছে নিতে পারো উপযুক্ত পিরিয়ড প্রোডাক্টটি।
স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিন
সবচেয়ে সহজলভ্য ও সুপরিচিত মেন্সট্রুয়াল প্রোডাক্টের নাম স্যানিটারি প্যাড। মোটাদাগে আমাদের দেশে দুই ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন পাওয়া যায় – প্যান্টি ও বেল্ট সিস্টেম। এর পাশাপাশি ভারী রক্তপাতের দিন বা রাতে পরার জন্যও বাজারে আলাদা প্যাড রয়েছে।
প্যাডের ব্যবহার সবচেয়ে সহজ হওয়ায় কিশোরীদের প্রথমদিককার পিরিয়ডগুলোতে প্যাড ব্যবহার করাই ভালো। পিরিয়ডের সময় স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলা থেকে শুরু করে প্রায় সবধরনের অ্যাক্টিভিটির জন্যই প্যাড উপযুক্ত।
প্যাডের ব্যবহার খুব বেশি অসুবিধাজনক না হলেও অনেক কিশোরীই অ্যালার্জি ও র্যাশের সম্মুখীন হয়। এজন্য প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে প্রতি ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পরপর প্যাড পরিবর্তন করতে হয়। এছাড়া ঠিকভাবে পরতে না পারলে লিকেজের কিছুটা ভয় থাকে।
কাপড়ের তৈরি রিইউজ্যাবল প্যাডও পাওয়া যায় বাজারে। যেমন ঋতুর রিইউজ্যাবল প্যাড। রিইউজ্যাবল হওয়ায় এটা ১ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আরামদায়ক কাপড় দিয়ে তৈরি হওয়ায় এটি স্বস্তিদায়ক এবং লিকেজের ভয়ও কম।
ট্যাম্পন
যদিও আমাদের দেশে ট্যাম্পন এখনো তেমনভাবে পরিচিত ও প্রচলিত না, তবে বড় বড় মার্কেট ও অনলাইন শপে ইদানিং ট্যাম্পন পাওয়া যাচ্ছে। ডিজাইন ও পদ্ধতির দিক থেকে ট্যাম্পন প্যাডের চেয়ে একদম আলাদা। প্যাড যেখানে পিরিয়ডের রক্ত বাইরে থেকে শোষণ করে, ট্যাম্পন সেখানে যোনির ভেতর থেকেই শোষণ করে নেয়।
ট্যাম্পনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর ব্যবহারে পিরিয়ডের অস্বস্তিকর ভেজা ভাবটার বদলে শুষ্ক অনুভূত হয়। তাছাড়া সাঁতার কাটা বা বৃষ্টিতে ভেজার সময়ও লিকেজের কোনো ভয় থাকে না।
তবে ট্যাম্পনের ব্যবহার কিশোরীদের জন্য কিছুটা কঠিন হতে পারে। তাছাড়া ১০-১২ ঘন্টার বেশি ট্যাম্পন পরিবর্তন না করলে টক্সিক শক সিন্ড্রোম (TSS) এর ঝুঁকি থাকে!
পিরিয়ড কাপ
পিরিয়ড প্রোডাক্টদের অন্যতম সদস্য হলো পিরিয়ড কাপ বা মেন্সট্রুয়াল কাপ। মেডিক্যাল গ্রেড সিলিকন তৈরি নরম এই কাপ যোনিপথ দিয়ে প্রবেশ করাতে হয়। জরায়ুর মুখের সরাসরি নিচে থেকে কাপটি পিরিয়ডের রক্ত সংগ্রহ করে যা ৮-১০ ঘন্টা পরপর বা প্রয়োজন অনুসারে ৬ ঘন্টা পর ফেলে দিতে হয়।
প্রথমদিকে এর ব্যবহার কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে। তবে সঠিক টেকনিক জেনে কয়েকবার প্র্যাক্টিস করলে পিরিয়ড কাপের ব্যবহার খুব সহজেই শেখা যায়। এটি সবচেয়ে পরিবেশ বান্ধব মেন্সট্রুয়াল প্রোডাক্ট, কারণ উন্নত মানের একটি কাপ তুমি ৪ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবে। তবে এটা ব্র্যান্ডের উপর নির্ভর করে। তাই কেনার সময় এই বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। পিরিয়ড কাপের দাম বেশি হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটাই সবচেয়ে সাশ্রয়ী। কেনার আগে প্রস্তুতকারক কোম্পানি থেকে জেনে নেবে প্রোডাক্টটি এফডিএ অনুমোদিত কিনা।
তো এই ছিল প্রচলিত কিছু পিরিয়ডকালীন প্রোডাক্ট। আরাম, পছন্দ ও কাজের ধরন বুঝে নিজের জন্য বেছে নাও যেটি তোমার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।
– নাদিয়া নুসরাত
Tampons and period cups seems kind of scary