পিরিয়ড নিয়ে সমাজে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা
পিরিয়ড একটি অসুখঃ
অনেকে মনে করেন পিরিয়ড একটি অসুখ। কিন্তু এটা একদমই ভুল ধারণা। পিরিয়ড কোনো অসুখ নয়। পিরিয়ড নারীদের জীবনের খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।
পিরিয়ড চলছে এমন নারীকে এড়িয়ে চলাঃ
একটি ধারণা প্রচলিত আছে, পিরিয়ড চলছে এমন নারীর সাথে যদি কেউ মেশে তাহলে সে ও অসুস্থ হয়ে পড়বে। এমনকি অন্য কোনো নারী যদি পিরিয়ড চলছে এমন কোনো নারীর সাথে মেলামেশা বা চলাফেরা করে তবে তারও পিরিয়ড শুরু হয়ে যাবে।
এসব সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ পিরিয়ড কোনো অসুখ নয়। পিরিয়ড ছোঁয়াচেও নয়।
রান্নাঘরে যেতে না দেওয়াঃ
পিরিয়ড চলাকালীন অনেক নারীকেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তাকে রান্না করতে দেওয়া হয় না, এমনকি রান্নাঘরেও যেতে দেওয়া হয় না। কারণ তার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন যেহেতু ঐ নারীর পিরিয়ড চলছে তাই সে অপবিত্র। অপবিত্র নারীর হাতের খাবার খেতে তারা ইচ্ছুক নন।
কিন্তু সঠিক তথ্যটি হচ্ছে, পিরিয়ড হলে নারী অপবিত্র হয়ে যায় না। আর তার হাতের রান্না খাওয়া যাবে না এটা একদমই ভুল একটি ধারণা।
পিরিয়ড রক্তশূন্যতার কারনঃ
এটি আরেকটি ভুল ধারণা। পিরিয়ড রক্তশূন্যতার কারণ নয়। পিরিয়ডের সময় সাধারণত ১০ থেকে ৩৫ মিলিলিটারের মত রক্ত শরীর থেকে বের হয়ে যায় যা ২ থেকে ৭ টেবিল চামচ-এর সমান। এতে কোনো ভাবেই রক্তশূন্যতা সৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
শশা/ডাব/ঠান্ডা পানি না খাওয়াঃ
পিরিয়ড চলাকালীন অনেক পরিবারেই নারীদের শশা/ডাব বা ঠান্ডা পানীয় জাতীয় খাবার খেতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু এগুলোর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। তাই, পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে শশা/ডাব/ঠান্ডা পানি খাওয়া যাবে না এটা পুরোপুরি ভ্রান্ত ধারণা।
মাছ-মাংস বেশি খাওয়া যাবে নাঃ
কেউ কেউ মনে করেন পিরিয়ড হলে মাছ-মাংস খাওয়া উচিৎ নয়। এতে করে বেশি রক্তক্ষরণ হবে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলে ঠিক এর বিপরীত কথা। পিরিয়ডের সময় মাছ-মাংসসহ প্রচুর আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে।
এছাড়াও এলাকা ভেদে পিরিয়ড নিয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। এই ভুল ধারণা ভাঙাতে তোমরাও কিন্তু সচেতনতা তৈরিতে কাজ করতে পারো।
(বিদ্রঃ পিরিয়ড নিয়ে আরো জানতে পড়তে পারো “ঋতু কমিক বই”। পিরিয়ডের পাশাপাশি বয়ঃসন্ধির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবে এই বইয়ে। বইটি পেতে ইনবক্স করো ঋতু-র ফেসবুক পেইজে। পেইজ লিংক – https://www.facebook.com/Wreetu.Book)