Menstrual Health Management

পিরিয়ডের সময় মুড সুইংঃ সমাধানের উপায় 

প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম (PMS) মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। অনেক মেয়ের পিরিয়ডের আগের দিনগুলিতে মুড সুইং ঘটে থাকে। পিরিয়ডের সময় খিটখিটে রাগ এবং মেজাজের পরিবর্তন অনেক মেয়েদের মধ্যে দেখা যায়। এগুলোকেই প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম হিসেবে ধরা হয়। 

গবেষকদের মতে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে এমনটি ঘটে থাকে। মেয়েদের পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরপরই ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে এবং দুই সপ্তাহ পরে তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে। এরপর আবার ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায় এবং মাসিক শুরু হওয়ার ঠিক আগে আবার  ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। হরমোনের এমন পরিবর্তনই প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোমের কারণ বলে মনে করা হয়।

ঋতুস্রাব হওয়া মেয়েদের ৩ থেকে ৮  শতাংশের মধ্যে প্রি-মেনস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার (PMDD) নামে আরও গুরুতর অবস্থা রয়েছে। তারা তাদের পিরিয়ডের এক বা দুই সপ্তাহ আগে মারাত্মকভাবে হতাশ হয়ে পড়ে। 

প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম নির্ণয় করার জন্য  নিম্নলিখিত লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তত পাঁচটি থাকতে হবে:

  • গভীর দুঃখ বা হতাশা
  • দীর্ঘস্থায়ী বিরক্তি এবং রাগ
  • উত্তেজনা বা উদ্বেগ
  • মেজাজ পরিবর্তন
  • দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং সম্পর্কের প্রতি অনাগ্রহ
  • চিন্তা করতে বা ফোকাস করতে সমস্যা
  • ক্লান্তি

জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম তথা মুড সুইংকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চলো তাহলে এই বিষয়ে কিছু টিপস জেনে নিই!

ব্যায়াম

ব্যায়ামের সময় এন্ডোরফিন হরমোন মুক্তি পায় যা রাগ নিয়ন্ত্রণ এবং বিষণ্ণতা অনুভূতি দূর করতে সাহায্য করে। ব্যায়াম শারীরিক ও মানসিক শক্তি বাড়ানো এবং ক্র্যাম্প কমানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো বা সাঁতারের মতো অ্যারোবিক ব্যায়াম এক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে।  

ডায়েট

উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার রক্তে শর্করার পরিবর্তন ঘটাতে পারে। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে পিরিয়ডের আগে তা কান্নাকাটি এবং বিরক্তির কারণ তৈরি করতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে তাই কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ। 

ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং মিষ্টি এড়িয়ে চলতে হবে। এক মার্কিন গবেষণায় দেখা গেছে, পিরিয়ডের দুই সপ্তাহ আগে কফি এবং অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকলে প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। কারণ ক্যাফেইন নার্ভাসনেস এবং ঘুমের সমস্যা বাড়াতে পারে।

স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

স্ট্রেস প্রি-মেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোমকে আরও খারাপ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। যার ফলে মুড সুইং-এ ও বড়ো ধরণের পরিবর্তন আসতে পারে। তাই স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে মেডিটেশন বা ইয়োগা একটি ভালো উপায় হতে পারে। 

মুড সুইং নিয়ন্ত্রণে এই বিষয়গুলি মেনে চলতে পারো। ফলাফল কী হলো, তা আমাদের জানাতে পারো। 

– জেবুন্নাহার জেবা

admin

About Author

Leave a comment

You may also like

Menstrual Health Management

পিরিয়ডঃ জানা-অজানা (পর্ব ১)

“পিরিয়ড” এই শব্দটির সাথে কি তোমরা পরিচিত?  অনেকেই হয়তো শুনেছো শব্দটি, কেউ কেউ হয়তো পিরিয়ড নিয়ে অনেক কিছুই জানো। আবার
Menstrual Health Management

পিরিয়ডঃ জানা-অজানা (পর্ব ২) 

পিরিয়ড নিয়ে সমাজে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা  পিরিয়ড একটি অসুখঃ  অনেকে মনে করেন পিরিয়ড একটি অসুখ। কিন্তু এটা একদমই ভুল