সন্তানকে ডিভাইস আসক্তি থেকে মুক্ত করার চেষ্টা (পর্ব ০৪)

নতুন কিছু সৃষ্টির আনন্দ মানুষকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করে। সেই সাথে তা যদি হয় ঘরে থাকা নানা দ্রব্যাদি, যা আমাদের এখন আর প্রয়োজন নেই তা দিয়ে তৈরি, তাহলে তো কথাই নেই।

ক্রাফটিং আর রিসাইক্লিং খুবই মজার আর মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষেত্রেও খুব কাজের। বাজারে এই রিলেটেড অনেক কিছু কিনতে পাওয়া যায়। তবে বাড়িতে থাকা দ্রব্যাদিকেই আমি প্রাধান্য দিই। এজন্য প্রথমেই আমি ইউটিউব আর ফেসবুক থেকে নানা ভিডিও আগে দেখে নিয়েছি। এরপর লিস্ট করেছি কী কী বাড়িতে আছে। এর থেকে কী তৈরি করা যাবে। আর কী নেই যা আমাকে কিনতে হবে।

আমি কিছু তৈরি করার ক্ষেত্রে আমার ঘরে থাকা দ্রব্য দিয়েই মজার কী তৈরি করা যাবে তার দিকে বেশি জোর দেই। যেমন, আমাদের ঘরে নিউজপেপার থাকে। আইসক্রিম খেলে তার কৌটা আর কাঠি আমরা ধুয়ে জমিয়ে রাখি। পানি আর কোল্ড ড্রিংসের বোতল, নানা প্লাস্টিকের বক্স আমরা ফেলে না দিয়ে কালেক্ট করতে শুরু করি। কাঁচি ঘরেই ছিল। শুধু কিনলাম গ্লু।

বাচ্চাদের শেখালাম, টাকা না খরচ করে আমরা নানা কিছু বানাতে চেষ্টা করবো। এতে ওরা কী বুঝলো জানিনা। এখন তো লেখা শেষ হলে কলম পর্যন্ত না ফেলে জমিয়ে রাখে। কোণা উঠে যাওয়া গ্লাস, মগ, খালি সসের বোতল, ফাটা কাঁচের বা প্লাস্টিকের বাটি, প্লেট, তেলের বোতল, বিস্কুটের মোটা কাগজের প্যাকেট কিছুই ফেলে দিই না।

যাক, এরপর টিভিতে ভিডিয়ো চালিয়ে আমরা নানা কিছু বানাই। কাজগের ফুল, ফুলদানি, পেপার ওয়েট, নানা শোপিস। এমন কী পাশের ফ্ল্যাটের নতুন ফ্রিজ কেনার পর যে ককশিট আসে, তা চেয়ে এনে তা দিয়েও আমরা কাজ করবার চেষ্টা করেছি।

ষোল গুটি খেলব, কিন্তু গুটির অভাবে খেলতে পারছিলাম না। আমরা ছোট বেলায় পাথর বা ইটের টুকরো রঙ করে বানিয়ে ফেলতাম। এখন কোথায় কী পাবো ভাবতে ভাবতেই মাথায় এলো বোতলের মুখ দিয়ে বানানো যায়। দুই রঙের ১৬ টা করে বোতল থেকে মুখ বের করে গুটি বানিয়ে ফেললাম।

এই সব কাজের বেশির ভাগ বাচ্চাদের দিয়ে করাই। তারা খুবই উৎসাহ নিয়ে এই কাজগুলো করে। অসংখ্য ভিডিয়ো আছে অনলাইনে। এসব থেকে সহজে শিখে নিয়ে বাচ্চাদের সাথে টাইম কাটানো যায়।

মুসাররাত নাজ

(একজন টিনএজার কন্যার মা)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *