ফিটনেস এমন একটি বিষয় যার সাথে সম্পর্কিত তোমার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য।
এই বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলে?
সেন্টার ফর হেলথ অ্যান্ড এডুকেশনের তিনজন গবেষক তাদের ফিটনেস কেন্দ্রিক এক গবেষণাপত্রে বলেন যে, ‘ফিটনেস হলো সুস্থতা এবং কর্মক্ষমতা বিষয়ক বেশ কিছু সূচকের (criteria) সমষ্টি যা কোনো বিষয়ে মানুষের শারীরিক কিংবা মানসিক ক্ষমতা নির্ণয়ের মানদণ্ড হিসেবে গণ্য হয়’।
ফিটনেস অর্জনের চাবিকাঠি হলো ধারাবাহিক চর্চা। আর ধারাবাহিকতার জন্যে চাই ব্যক্তিগত লাইফস্টাইলের উপর ভিত্তি করে তৈরি রুটিন।
তাই, আজ তোমাদের জন্য থাকছে ব্যক্তিগত ফিটনেস রুটিন তৈরির একটি গাইডলাইন।
স্লিপ ম্যানেজমেন্ট
ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ ও ফুডান ইউনিভার্সিটির একটি সম্মিলিত গবেষণায় দেখা যায়, পরিপূর্ণ শারীরিক ও মানসিক ফিটনেসের জন্য চাই ৭ ঘণ্টার পর্যাপ্ত ঘুম। যা হতে হবে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী।
ইজিপশিয়ান জার্নাল অব নিউরোলজি- তে প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়, ঘুমের রয়েছে বেশ কয়েকটি সাইকেল, যা পূর্ণ হলে বৃদ্ধি পায় মানুষের কর্মদক্ষতা। আর, স্লিপ সাইকেল পূর্ণ করার উপায় হচ্ছে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে যাওয়া।
ব্যালেন্সড ডায়েট
ব্যালেন্সড ডায়েট হচ্ছে সকল ধরনের ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারের সমন্বয়ে তৈরি একটি নির্দিষ্ট অনুপাতের খাদ্যতালিকা।
“ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ” এর এক গবেষণায় একদল শিশুকে দেয়া হয় ব্যালেন্সড ডায়েট এবং অপর একদল শিশুকে দেয়া হয় দৈনন্দিন সাধারণ খাবার।
লক্ষ্য করা যায় ব্যালেন্সড ডায়েট দেয়া শিশুদের প্রত্যেকের শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে বেড়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও এবং নরমাল ডায়েট দেয়া শিশুদের তুলনায় তাদের পরীক্ষার রেজাল্ট অনেকাংশে ভালো হয়।
নিয়মিত ব্যায়াম
ইয়ান জুন ইয়াঙ্গ নামের একজন কোরিয়ান মেডিসিন গবেষক জানান, কিশোর-কিশোরীদের প্রতিদিন ন্যূনতম ১ ঘণ্টা শারীরিক ব্যায়াম অত্যন্ত জরুরি। যা হতে হবে অ্যারোবিক, কার্ডিও এবং হাড়ঁ-পেশী মজবুতকারী ব্যায়ামের সমন্বয়ে।
ব্যায়ামকে আনন্দদায়ক করতে তোমার ব্যক্তিগত রুটিনে রাখতে পারো ফুটবল কিংবা ক্রিকেট খেলার আয়োজন। সকাল বেলা যেতে পারো জগিং-এ। কিংবা কোনো দিন বেরিয়ে যেতে পারো দলবেধে সাইক্লিংয়ে।
টাইম ম্যানেজমেন্ট
সর্বোপরি ব্যক্তিগত ফিটনেস রুটিন মেইনটেইন করতে হলে চাই সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা। সবকিছু সময়মতো করতে পারলেই সম্ভব প্রতিদিনের ফিটনেস রুটিন মেনে চলা।
যেমন ধরো, যদি তুমি দেরিতে ঘুমোতে যাও তবে সকালে উঠতেও দেরি হবে। দেরিতে ওঠার কারণে ব্যহত হবে তোমার সকালের ব্যায়ামের রুটিন কিংবা বাদ যেতে পারে ব্যালেন্সড ডায়েটের রুটিন।
রাতের ঘুম কিংবা সকালের শুরু কোনোটি যদি পারফেক্ট না হয় তবে সারাদিন দুর্বলতা অনুভব হবে, যার ফলে কমে যাবে তোমার মস্তিষ্কের প্রোডাক্টিভিটি।
তাই এখন থেকেই মেনে চলো ফিটনেস রুটিন।
(মোঃ রাফসান তালুকদার)