বয়ঃসন্ধিতে শারীরিক পরিবর্তন

বয়ঃসন্ধি শব্দটির সাথে তোমরা সবাই পরিচিত নিশ্চয়? 

আচ্ছা, সহজ করে দিচ্ছি। 

জন্মগ্রহনের পর একজন মানুষকে শৈশব ও যৌবন, এই দুই ধাপের মাঝে আরো একটি ধাপ পার করতে হয়। কী সেই ধাপ? কৈশোর! এই ধাপকেই বলা হয় বয়ঃসন্ধি, ইংরেজিতে যাকে বলে Puberty(পিউবার্টি )। আর তোমাদের বলা হয় কিশোর-কিশোরী (Teenager)। 

নিশ্চয় তোমার মনে প্রশ্ন জাগছে, সবই বুঝলাম কিন্তু কোন বয়সীদের কিশোর-কিশোরী বা টিনএজার বলা হবে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization – WHO) মতে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়স যাদের, তাদেরকেই কিশোর-কিশোরী বা টিনএজার বলা হবে। অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১০ থেকে ১৯ বছরের এই সময়টায় বয়ঃসন্ধিকাল। 

এই সময়ে তোমার শারীরক ও মানসিক অনেক পরিবর্তন ঘটে, তুমি কী জানো? আজ আমরা জানবো শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে।  

শারীরিক পরিবর্তন 

উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধিঃ বয়ঃসন্ধিতে তোমার শরীরের অবস্থান করা হরমোনদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়। গ্রোথ হরমোনও এর ব্যতিক্রম নয়। গ্রোথ হরমোনের কারণেই এই সময়ে তুমি আগের তুলনায় লম্বা হবে, তোমার ওজনও বাড়বে।

লোমঃ বয়ঃসন্ধিতে ছেলেদের মুখে গোঁফ ও দাড়ির রেখা ফুটে ওঠে। এর পাশাপাশি বগল ও শরীরের অন্যান্য অংশে লোম গজায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে বগল ও শরীরের অন্য অংশে লোম গজায়। 

পেশি ও মেদঃ ছেলেদের পেশি সুগঠিত হয় এই সময়ে। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না। অন্য দিকে ছেলেদের মুখ ও পেটে মেদ সঞ্চিত হয়। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে মেদ সঞ্চিত কয় স্তন, কোমর ও নিতম্বে।

কন্ঠস্বরঃ বয়ঃসন্ধিতে ছেলেদের কন্ঠস্বর গাঢ় ও ভারী হয়ে ওঠে। মেয়েদের কন্ঠস্বর এই সময়ে আরো পরিণত হয়। 

ব্রণঃ ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই এই সময়ে ব্রণের আবির্ভাব ঘটে। এজন্য চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এটা তোমার স্বাভাবিক পরিবর্তনেরই অংশ। 

পিরিয়ড ও বীর্যস্খলনঃ বয়ঃসন্ধিতে মেয়েদের পিরিয়ড বা মাসিক শুরু হয়। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে বীর্যস্খলন ঘটে। পিরিয়ড নিয়ে মেয়েদের যেমন উদ্বিগ্ন বা ভীত হওয়ার প্রয়োজন নেই, তেমনি ছেলেদের বীর্যস্খলনের কারণে নিজেকে খারাপ বা অপরাধী ভাবার কারণ নেই। এটি বয়ঃসন্ধির খুব স্বাভাবিক ঘটনা। মেয়েরা এই সময়ে সাধারণত প্যাড ব্যবহার শুরু করে আর ছেলেদের এই সময়ে নিজেদের পরিস্কার পরিচ্ছনতার দিকে গুরুত্ব দিতে হয়।  

এগুলো সবই এই বয়সের স্বাভাবিক পরিবর্তন। এমন কোনো পরিবর্তন তোমার মাঝে এলে ভয় না পেয়ে, উদ্বিগ্ন না হয়ে বা দুঃশ্চিন্তা না করে তোমার পরিবারের সাথে শেয়ার করো। পরামর্শ চাও। তারা নিশ্চয় তোমার পাশে থেকে তোমার জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই সময়টাতে তোমাকে সাহায্য করবে, সাপোর্ট দেবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *