স্বাস্থ্য ও সুস্থতা

টিনএজারদের জন্য স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল!

বয়ঃসন্ধিকাল, কিশোর-কিশোরীদের জন্য এক স্ট্রেসফুল সময়। বিশেষ করে হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের। অনেকেই পড়াশোনা ও পারিপার্শ্বিক আরো অনেক বিষয় নিয়ে প্রেশার অনুভব করে। 

যদি সঠিক সময়ে প্রতিকার না করা হয়, তাহলে এসব দুশ্চিন্তা ও দুর্ভাবনা পরবর্তী জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণে আমাদের আজকের বিষয় টিনএজারদের স্ট্রেস ম্যানেজ করার কিছু কৌশল।

১। দুশ্চিন্তার কারণ গুলো লিখে ফেলোঃ 

জেমস ক্ল্যাভেলের এক উপন্যাসের নায়ক কিডলিন তার জীবনের সব সমস্যা সমাধানে একটা নিয়ম মেনে চলতো, যাকে কিডলিনের নীতি বলে। কিডলিনের নীতি অনুসারে, “স্পষ্টভাবে সমস্যা লিখে ফেললে তার অর্ধেকখানি সমাধান হয়ে যায়!”

তাই যখনই তুমি স্ট্রেস অনুভব করবে, একটা ডায়রিতে তা লিখে ফেলো। এতে সমস্যা গুলো আইডেন্টিফাই করার পাশাপাশি তাদের সমাধান নিয়েও কিছু ধারণা পেয়ে যাবে।

২। আস্থাভাজন, দায়িত্বশীল ও অভিজ্ঞ কাউকে জানানোঃ 

সব সমস্যার সমাধান একা করা যায় না। তুমি হয়তো চিন্তা করতে পারো, “আমার নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করবো”।

খুবই ভালো চিন্তা। তবে অভিজ্ঞদের মতামত ও সাহায্য নিলে বিষয়টা আরো সহজ হয়ে যাবে। 

৩। বিরতি নেওয়া ও বেড়াতে যাওয়াঃ 

পড়াশোনার চাপ ও অন্যান্য ব্যস্ততা টিনএজারদের মাঝে বার্ন আউট তৈরি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, একটা সুন্দর ছুটি কাটিয়ে আসলে ৯৪% মানুষই এনার্জেটিক ও ভালো মুডে থাকে! এছাড়া, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের হেলথ পাবলিকেশন্স অনুসারে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেবল ২০ মিনিট থাকলেও শরীরে স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ কমে যায়। 

তাই সুযোগ করে, পরিবার-পরিজনের সাথে পাহাড় বা সমুদ্র থেকে ঘুরে আসতে পারো। 

৪। শরীর চর্চা ও মেডিটেশনঃ

যেসকল টিনএজাররা অ্যাক্টিভ থাকে, নিয়মিত শরীর চর্চা ও মাইন্ডফুলনেস অনুশীলন করে, তাদের স্ট্রেস ও উচ্চ চাপের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। তাই দৈনিক অন্তত ২০ মিনিট বাইরে হাঁটা, জগিং, সাঁতার সহ অন্যান্য ব্যায়াম করা উচিত। 

ব্রিথিং এক্সারসাইজ ও মেডিটেশনও স্ট্রেস কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী।

৫। ঘুমঃ

জন হপকিন্স এর শিশু-বিশেষজ্ঞ ডক্টর মাইকেল ক্রসেটির মতে, কৈশোরকালে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং মস্তিষ্কের সুষ্ঠু বিকাশে দৈনিক অন্তত ৯ ঘন্টা ঘুম দরকার। 

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম ও বিশ্রাম স্ট্রেস লেভেল কমিয়ে দিতে সক্ষম। তাই নিয়মিত ঠিক সময়ে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা উচিত।

একটা লম্বা সময় ধরে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ থাকলে এবং সঠিক ভাবে স্ট্রেস সামলাতে না পারলে, শারীরিক ও মানসিক ভাবে দীর্ঘ্যস্থায়ী অনেক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তোমার মাঝে যদি স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কোনো উন্নতি লক্ষ্য না করো, তাহলে খুব দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নাও।

– নাদিয়া নুসরাত

admin

About Author

3 Comments

  1. Mariya

    October 12, 2023

    ৩ নাম্বার কৌশলটা অনেক বেশি কার্যকর।

    • Mostafiz Rahman Shuvo

      October 12, 2023

      আর্টিকেলটি পড়ার জন্য এবং আপনার মতামত জানানোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ! আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

  2. Nasfia Nusfat

    October 12, 2023

    I have been suffering from lack of good sleep lately, is it symptom of stress?

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

স্বাস্থ্য ও সুস্থতা

বয়:সন্ধিতে রাগ নিয়ন্ত্রনের সেরা ৭টি টিপস

কোনো কারণ নেই তবু সব কিছুর উপর রাগ লাগছে! বিরক্ত লাগছে প্রিয় গিটারকে। প্রিয় দলের খেলা তুমি কখনোই মিস করো
স্বাস্থ্য ও সুস্থতা

বয়ঃসন্ধিতে শারীরিক পরিবর্তন

বয়ঃসন্ধি শব্দটির সাথে তোমরা সবাই পরিচিত নিশ্চয়?  আচ্ছা, সহজ করে দিচ্ছি।  জন্মগ্রহনের পর একজন মানুষকে শৈশব ও যৌবন, এই দুই